দ্বিশতাধিক মানুষ হত্যা
১৩ জুলাই ২০১২ঘটনার খুঁটিনাটি ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে এবং ইন্টারনেটে এ'যাবৎ ত্রেমশে'র হত্যাকাণ্ডের অব্যবহিত ফলশ্রুতির কোনো ছবি দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু হামা'র বিপ্লবী নেতৃত্ব পরিষদ রয়টার্সকে জানিয়েছে যে, বৃহস্পতিবার সরকারি সেনারা ত্রেমশে নামধারী সুন্নি মুসলমান গ্রামটির উপর ভারি অস্ত্রশস্ত্র সহ আক্রমণ চালায় এবং গোলাবর্ষণের পর আলাউইট সশস্ত্র যোদ্ধারা গ্রামটিতে ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালায়৷ কিছু বেসামরিক নাগরিক পালানোর সময় আলাউইট মিলিশিয়ার গুলিতে প্রাণ হারায়৷
বিরোধীপক্ষের বিবরণ শুনে মনে হতে পারে যে, বিদ্রোহী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির কিছু সদস্য গ্রামটিতে অবস্থান করছিল৷ এ'সব বিবরণে ক্ষেত্রবিশেষে এমনকি ২২০ জনের নিহত হওয়ার কথা বলে হয়েছে৷ সিরীয় সেনাবাহিনী গ্রামটিকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে রেখে কামান, ট্যাংক ও হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে গোলাবর্ষণ করে৷ এর পরে আসাদের বিশ্বস্ত শাহিবা মিলিশিয়া হাল্কা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালায়৷
সিরিয়া সরকার ত্রেমশে'র হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলেও এর জন্য ‘‘রক্তপিপাসু মিডিয়া'' এবং ‘‘সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীদের'' দায়ী করেছে৷ রাষ্ট্রীয় সানা সংবাদ সংস্থা লিখেছে, এর উদ্দেশ্য হল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে সিরিয়ার বিরুদ্ধে জনমতকে প্ররোচিত করা৷ অপরদিকে মুখ্য বিরোধী জোট সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল বলেছে: ‘‘সিরিয়ার অস্তিত্বের পক্ষে বিপজ্জনক এই পাগলামো থামানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি এবং তীব্র প্রস্তাব দরকার, যার ভিত্তি হবে জাতিসংঘের সনদের সাত নম্বর অধ্যায়৷'' অর্থাৎ যে অধ্যায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার উপায় রাখা আছে৷
ওদিকে জাতিসংঘ তথা আরব লিগের যৌথ দূত কোফি আনান আগামী সোমবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মিলিত হবেন এবং সিরিয়ার বিষয়ে আলোচনা করবেন৷ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রসঙ্গে এখনও ‘‘সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সমাধানের'' কথা বলছে এবং বলেছে যে, কোফি আনান বিরোধীপক্ষের সঙ্গে আরো সক্রিয়ভাবে কাজ করবেন, বলে মস্কো প্রত্যাশা করছে৷ কিন্তু বিরোধীপক্ষের দৃষ্টিতে ক্রেমশে'র হত্যাকাণ্ডের পর আনান ও তাঁর শান্তি পরিকল্পনা সম্ভবত তামাদি হয়ে গেছে৷ সিরিয়ার মুসলিম ব্রাদারহুড শুক্রবার বলেছে যে, কোফি আনান এবং সিরিয়ার দুই মিত্র ইরান ও রাশিয়াকে তাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য ত্রেমশের হত্যাকাণ্ডের দায় বহন করতে হবে৷
এসি / জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি)