1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্মৃতিভাণ্ডারের রহস্য অবাক করার মতো

২ জুন ২০২০

কখনো হাজার চেষ্টা করেও কারো নাম মনে পড়ে না৷ কখনো নাছোড়বান্দা গান মন থেকে দূর হয় না৷ স্মৃতিভাণ্ডারের নানা বৈশিষ্ট্য জানা থাকলে এমন অবস্থার সঙ্গত কারণগুলি জানা যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3d7mZ
ছবি: Colourbox/I. Jacquemin

আমাদের স্মৃতিভাণ্ডার আসলে বিশাল এক মহাফেজখানা৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যন্ত্রের মতো নিখুঁতভাবে কাজ করে এই প্রণালী৷ কখনো কখনো অবশ্য গোলযোগ দেখা যায়৷ তখন জরুরি প্রয়োজন হলেও স্মৃতির নাগাল পাওয়া যায় না৷

কখনো আবার ইচ্ছা না হলেও আমাদের মনে কিছু স্মৃতি জেগে ওঠে৷ কিছু স্মৃতি আবার আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়৷ স্মৃতিভাণ্ডারের এমন খেলার তিনটি দৃষ্টান্তের দিকে নজর দেওয়া যাক৷

প্রথমত, জিবের ডগায় এসেও স্মৃতি পিছলে যায়৷ আমাদের সবারই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে৷

আরে, কী যেন নাম ওই অভিনেতার? জানি তো, কিন্তু মনে পড়েও যেন পড়ছে না! মস্তিষ্কে তখন একটি ক্রিয়া চলে৷ কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে স্মৃতি মস্তিষ্কের বিভিন্ন জায়গায় জমা থাকে৷

দৃষ্টি সংক্রান্ত ‘ভিশন সেন্টার’ বা দৃষ্টিকেন্দ্রে মানুষটির চেহারা সংরক্ষিত থাকে৷ কণ্ঠস্বর ‘হিয়ারিং সেন্টার’ বা শ্রবণকেন্দ্রে জমা থাকে৷ পদবির শব্দাংশের দৈর্ঘ্য ‘ল্যাংগুয়েজ সেন্টার’ বা ভাষাকেন্দ্রে স্থান পায়৷ নাম মনে করতে হলে মস্তিষ্ককে এই সব টুকরোগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়৷ সেই প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটা বেশ সহজ৷ যেমন একই ধরনের নাম মনে পড়লে আসল নাম আড়ালে চলে যায়৷

তাহলে কী করা যায়? চেষ্টা বন্ধ করে একেবারে অন্য ধরনের চিন্তা করা উচিত৷ তখন মস্তিষ্কে বাধা উঠে যায়৷ আচমকা নাম মনে পড়ে যায়৷ আরে! সেটা তো ছিল জঁ ক্লোদ ফান ডামের ছবি!

দ্বিতীয়ত গন্ধ সংক্রান্ত স্মৃতি৷ কখনো কখনো না চাইতেই স্মৃতি আমাদের আচ্ছন্ন করে দেয়৷ মনে হয়, এই গন্ধ যেন কোথায় পেয়েছিলাম? তখন না চাইলেও কোনো এক স্মৃতি ভেসে ওঠে৷ কিন্তু কেন এমনটা হয়?

এর উত্তর খুব সহজ৷ একমাত্র গন্ধ শোঁকার অনুভূতিই ‘এমিগডালা’, অর্থাৎ মস্তিষ্কের আবেগ কেন্দ্র এবং তার পাশেই হিপোক্যাম্পাস, অর্থাৎ মস্তিষ্কের যে অংশে স্মৃতি সৃষ্টি হয়, তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত৷ গন্ধ এবং গন্ধের সঙ্গে যুক্ত স্মৃতি সে কারণেই স্মৃতিভাণ্ডারে পাকা জায়গা করে নেয়৷

তৃতীয়ত আকর্ষণীয় কোনো সুর৷ কখনো নির্দিষ্ট কোনো স্মৃতি মন থেকে দূর করতে না পারলে চরম অস্বস্তি হয়৷ যেমন কোনো এক গানের কলি৷ কোনো রুটিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেই সাধারণত এমন কোনো সুর মনে গেঁথে যায়৷ কারণ তখন ‘ওয়ার্কিং মেমরি' ততটা ব্যস্ত থাকে না৷ ক্লান্তি প্রতিরোধ করতে মস্তিষ্ক স্মৃতিভাণ্ডার হাতড়ে কখনো আমাদের বিশেষ পছন্দ, অথবা একেবারেই অপছন্দের গান তুলে আনে৷

রেকর্ড প্লেয়ারের মতো ‘হিয়ারিং সেন্টার’ স্মৃতিভাণ্ডারে সেই গান চালাতেই থাকে৷ মনের মধ্যে আমরা সেই সংগীত শুনতে পাই৷ তখন মনে মনে সেই সুরে সুর মিলিয়ে গাওয়ার তাগিদ জন্মায়৷ তখন অবিরাম সেই গান চলতে থাকে৷ কারণ মনে মনে গান গাইলে মনে মনে সেটা শুনতেও হয়৷ তখন আবার গাইতে ইচ্ছা করে৷ কীভাবে সেটা থামানো সম্ভব?

গবেষকদের পরামর্শ, দাঁতে দাঁত চেপে সেই গান একেবারে শেষ পর্যন্ত শুনুন৷ তারপর স্মৃতিভাণ্ডারের একেবারে গভীরে সেই গান পুঁতে দিন৷ তখন আপদ বিদায় হবে৷

ক্রিস্টিয়ান্স/ভাগনার/এসবি