1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৫ জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা'

৩০ মে ২০১৭

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা' আঘাত হেনেছে৷ সকাল ৬ টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে৷ ঝড়টি এখন বাংলাদেশ অতিক্রম করছে৷ ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/2dnpO
Bangladesch Evakuierung Zyklon Mora
ছবি: Getty Images/AFP

সকাল ৬টার দিকে টেকনাফে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার৷ একই সময়ে কক্সবাজার সদরে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার৷

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, মঙ্গলবার ভোর থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোর' কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে৷ সকাল ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা'র অবস্থান ছিল টেকনাফের সেন্টমার্টিন থেকে দক্ষিণে ১৩০ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে৷ এটি আরও ঘনিভূত হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হয়ে উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়৷

এর আগে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত  দিয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়৷

আবদুল আজিজ

এদিকে, কক্সবাজার সীমান্ত এলাকা টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে৷ বাতাসের তীব্রতায় উপড়ে গেছে বহু গাছপালা এবং অধিকাংশ টিনের চালা৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গবাদি পশু ও পানের বরজ৷ দ্বীপের অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করলেও তাদের ঘরবাড়ি উপড়ে গেছে৷ এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ শতাংশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হবার খবর পাওয়া গেছে৷ ব্যাপক ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে৷

কক্সবাজারের সাংবাদিক আব্দুল আজিজ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কক্সবাজার , টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন এলাকায় ঝড়ে ব্যাপক  ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে৷

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা' মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৪৭৯টি, কক্সবাজারে ৫৩৮টি, লক্ষ্মীপুরে ১০২টি, বাগেরহাটে ২২৭টি, বরগুনায় ৩৩৫টি, নোয়াখালীতে ৪১২টি ও ফেনীতে ৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে৷ এদিকে, বরিশাল বিভাগের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকা থেকে জনসাধারণকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন কাজ করছে৷ ইতোমধ্যে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দু'লাখ ৩৫ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন৷ এর মধ্যে কক্সবাজারের এক লাখ ৬০ হাজার ও চট্টগ্রামের ৭৫ হাজার মানুষ রয়েছেন৷

শামসুদ্দিন আহমেদ

এর আগে ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা'র প্রভাবে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়৷ সোমবার (২৯ মে) রাতে সমুদ্রে জোয়ারের পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় উপকূলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়৷ কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, সমিতি পাড়া, মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি, ধলঘাটা, পেকুয়ার রাজাখালী, মগনামা, উজানটিয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় প্লাবিত হয়েছে৷ ফলে জোয়ারের পানিতে মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে৷ এছাড়া উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷

প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র প্রভাবে ১৫  উপকূলীয় জেলা ও জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক  জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার  জলোচ্ছ্বাসে  প্লাবিত হচ্ছে৷ জেলাগুলো হচ্ছে, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা,ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা৷ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়া অধিদফতরের  বিশেষ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে৷

প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণসহ ঘন্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়৷

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২ টায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ ঘূর্ণিঝড়টি এখনো বাংলাদেশে সীমায় অবস্থান করছে৷ ঝড়টি দূর্বল হলে আমরা ১০ নম্বর মহা বিপদসংকেত নামিয়ে ফেলব৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান