রাজ্য ভবনে ধর্মীয় প্রতীক
২৬ এপ্রিল ২০১৮পহেলা জুন থেকে জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য বাভেরিয়ার অনেক ভবনেই শোভা পাবে ‘ক্রস'৷ সব স্কুলেও থাকবে এই প্রতীক৷ বাভেরিয়ার নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার এই সিদ্ধান্ত নিয়েই বসে থাকেননি, মঙ্গলবার মিউনিখের স্টেট চ্যান্সেলারির লবিতে নিজের হাতে লাগিয়েও দিয়েছেন একটি ক্রস৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-এর সহযোগী সংগঠন সিএসইউ-র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত স্যোডার আকস্মিক এ উদ্যোগের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘ এটি (ক্রস) বাভেরিয়ার পরিচয়ের স্বীকৃতি৷'' তবে এর মাধ্যমে রাজ্য প্রশাসনের ধর্মীয় নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হবে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে৷ স্যোডার মনে করেন, তাতে ধর্মীয় নিরপেক্ষতা অটুট থাকবে, এমনকি এর মাধ্যমে সংবিধানেরও লঙ্ঘন হবে না৷
এমনিতেই খ্রিষ্টান অধ্যূষিত রাজ্য বাভারিয়া৷ ২০১৬ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, সেখানে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫০ দশমিক ৪ ভাগ রোমান ক্যাথলিক এবং ১৮ দশমিক ৮ ভাগ প্রটেস্ট্যান্ট৷ এ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই স্যোডারের এই পদক্ষেপকে খ্রিষ্টানদের ধর্মানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কৌশল হিসেবে দেখছেন অনেকে৷
ভোট আদায়ের হাতিয়ার?
চলতি বছরের শেষের দিকে বাভেরিয়ায় নির্বাচন৷ তাই স্যোডারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন বাম দলের নেতা ইয়ান কর্টে৷ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সব পর্যায়ে জনগণকে বিভক্ত না করে সিএসইউ কেন কখনো সবাইকে একতাবদ্ধ করার কথা ভাবতে পারে না?'' তাঁর মতে, স্যোডারের এ সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থি তো বটেই, এটি ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়েরও চেষ্টা৷
এফডিপি দলের প্রধান নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার স্যোডারকে তুলনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের সঙ্গে৷ তাঁর মতে, ‘‘মার্কুস স্যোডার এবং সিএসইউ-র রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের কৌশল এর্দোয়ানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ সংবিধানের কিন্তু কোনো ধর্ম নেই!''
তবে জার্মানির প্রটেস্ট্যান্ট চার্চ ফেডারেশন (ইকেডি)-র সভাপতি হাইনরিশ বেডফোর্ড-স্ট্রোম মনে করেন, বাভেরিয়া রাজ্যের ভবনগুলোতে ক্রস টাঙানোতে দোষের কিছু নেই৷ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ক্রস-এর মাহাত্ম্য মনে রেখেই তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি৷
বেন নাইট/এসিবি