অবিচল উত্তর কোরিয়া
৭ আগস্ট ২০১৭আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল উত্তর কোরিয়া৷ এবার সে দেশের উপর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ৷
শনিবার সর্বসম্মতিক্রমে এক প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, যার ফলে উত্তর কোরিয়ার প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের বাৎসরিক রপ্তানির মাত্রা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে যাবে৷ এই পরিমাণ রাজস্ব হারালে প্রায় একঘরে হয়ে থাকা এই রাষ্ট্রের অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ তাছাড়া উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকরাও আর সহজে বিদেশে কাজ করতে পারবেন না৷ সেই সঙ্গে সে দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পথ কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ এমন প্রস্তাবে ঐকমত্যের ফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷
সোমবার ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন টেলিফোনে কথা বলেন৷ তাঁরা দুজনেই উত্তর কোরিয়ার উপর সর্বোচ্চ চাপ বজায় রাখার বিষয়ে একমত৷ চলতি মাসের শেষে অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া এক যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে৷ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু কর্মসূচি বর্জন করলে সংলাপের পথ এখনো খোলা আছে৷
সপ্তাহান্তে ফিলিপাইন্সের ম্যানিলা শহরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার প্রসঙ্গটি প্রাধান্য পেয়েছে৷ সেখানে রবিবার সন্ধ্যায় নৈশভোজে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতও হয়েছে৷ দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর সতীর্থকে কাং কিউংহোয়া তাঁর দেশের প্রস্তাবগুলিতে সাড়া দেবার আহ্বান জানান৷ জবাবে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রস্তাব আন্তরিক নয়৷ কারণ সে দেশ অ্যামেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে৷
উত্তর কোরিয়ার প্রধান সহযোগী চীন বর্তমান পরিস্থিতিতে চরম অস্বস্তিতে ভুগছে৷ উত্তেজনা প্রশমন করতে দুই কোরিয়ার মধ্যে অবিলম্বে যোগাযোগের আশা প্রকাশ করেছে সে দেশ৷ নিষেধাজ্ঞায় সম্মতি দিয়েও চীন বলেছে, এটা চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না৷ অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যেও উত্তেজনা কমানোর ডাক দিয়েছে বেইজিং৷ ম্যানিলায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, উত্তর কোরিয়া আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেনি৷
ম্যানিলায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, চীন ও রাশিয়াও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে সমর্থন জানানোর ফলে উত্তর কোরিয়া কড়া বার্তা পেয়েছে৷ তবে সে দেশের প্রতি কিছুটা সুর নরম করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হলে উত্তর কোরিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সংলাপ শুরু হতে পারে৷ সে দেশ যাতে নিরাপদ বোধ করে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে চলতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত দেন তিনি৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)