জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড পতন
২৮ আগস্ট ২০২০ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ৷ করোনার কারণে দেশটির ভোক্তা ব্যয়, বিনিয়োগ আর রপ্তানি তলানিতে ঠেকেছে৷ জুন পর্যন্ত তিন মাসে তাই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে নয় দশমিক সাত ভাগ৷
এটি রেকর্ড হলেও অর্থনীতিবিদেরা এর চেয়েও খারাপ আশঙ্কা করেছিলেন৷ কারণ ফেডারেল স্ট্যাটিসটিকস অফিস এর প্রাথমিক হিসাবে এই সময়ে প্রবৃদ্ধি দশভাগের বেশি কমার প্রাক্কলন করা হয়েছিল৷
এর আগে ২০০৭-০৮ সালেও বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল জার্মান অর্থনীতি৷ এর প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের প্রথম তিন মাসে জিডিপি চার দশমিক সাত ভাগ কমেছিল৷ কিন্তু এখনকার মতো এতটা কমেনি আর কখনোই৷
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে-জুলাই মাসে ভোক্তা ব্যয় প্রায় ১১ ভাগ, মূলধনী বিনিয়োগ ১৯.৬ ভাগ আর রপ্তানি কমেছে ২০.৩ ভাগ৷ নির্মাণ খাতের কার্যক্রমের পরিসংখ্যানে জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরছে৷ সেখানে প্রবৃদ্ধি চার দশমিক দুই ভাগ হ্রাস পেয়েছে৷
করোনা সংকটের শুরুতেই আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল৷ বছরের প্রথম ছয় মাসেই ভোক্তা আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনে খরচ করা হয়েছে ছয় হাজার ১০০ কোটি ডলার৷ তা সত্ত্বেও অর্থনীতিতে বড় ধরনের পতন ঠেকানো যায় নি৷
অন্যদের তুলনায় ভালো
শুধু জার্মানি নয়, করোনায় বিশ্বের উন্নত সব অর্থনীতিই সংকটে আছে৷ এই ধরনের দেশগুলোর জোট জি সেভেন-এ জাপান ছাড়া বাকি সদস্যদের অবস্থা জার্মানির চেয়েও খারাপ৷ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি ২০.৪ ভাগ কমেছে ব্রিটেনের৷
এরপরই আছে ফ্রান্স৷ ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩.৮ ভাগ জিডিপি হারিয়েছে, যেখানে প্রথম তিন মাসে কমেছিল প্রায় ছয় ভাগ৷
করোনার কারণে ইটালির ১২.৪ ভাগ, ক্যানাডার ১২ ভাগ আর জাপানের প্রবৃদ্ধি কমেছে সাত দশমিক আট ভাগ৷ অন্যদিক অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ওইসিডি এর ৩৭টি অর্থনীতির মোট জিডিপি প্রায় ১১ ভাগ পড়েছে৷
সামনে আশার আলো
অর্থনীতির এই নিম্নগতির পরিসংখ্যানেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে জার্মানিতে৷ বিধিনিষেধ শিথিলের পর আগস্টে ব্যবসা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ যা কোম্পানিগুলোর প্রত্যাশার চেয়েও ভালো বলে ইফো ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক রিসার্চ এর এক জরিপে উঠে এসেছে৷ জুলাইতে ব্যবসা পরিবেশ সূচকের যেখানে ৯০.৪ পয়েন্ট ছিল তা বেড়ে ৯২.৬ হয়েছে৷ ইফোর প্রেসিডেন্ট ক্লেমেন ফোস্ট বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘জার্মানির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে’’৷
বিশেষ করে সেবাখাতে ব্যবসার সূচকের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে৷ তাদের জরিপে আগামী ছয় মাসের চিত্রেও ইতিবাচক সম্ভবনারই আভাস মিলছে৷
তারপরও সরকারের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি ছয় দশমিক তিন ভাগ কমতে পারে৷
এফএস/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)