যুবরাজের উপর চাপ বাড়ছে
২৩ অক্টোবর ২০১৮রবিবার এক দলীয় সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসি়ডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান বলেন, তাঁরা চান ২রা অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেটে বিক্ষুব্ধ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগজির হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক৷ তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি৷
মঙ্গলবার সংসদে দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে এর্দোয়ান খাশগজির ‘নৃশংস’ হত্যাকাণ্ডকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদীত’ হিসেবে বর্ণনা করলেন৷ সৌদি আরব এই হত্যাকাণ্ডকে কাকতালীয় ঘটনা হিসেবে দাবি করলেও এর্দোয়ান তা মানতে রাজি নন৷ সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে সৌদি আরবে আটক ১৮ জন ব্যক্তিকে তুরস্কে এনে বিচারের ডাক দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট৷ খাশগজি হত্যার প্রস্তুতি, মূল ঘটনা ও তার পরের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কেও কিছু নতুন দাবি করেছেন এর্দোয়ান৷
উল্লেখ্য, তুরস্কের সরকারের দাবি, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এবং তথ্যপ্রমাণ মেটাতে বিশাল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাশগজিকে গলায় ফাঁস দিয়ে ধীরে ধীরে হত্যা করা হয়েছে৷ তারপর সৌদি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ গান শুনতে শুনতে তাঁর মৃতদেহ ১৫ টুকরো করেন৷ এর্দোয়ানের উপদেষ্টা ইয়াসিন আকটাই দাবি করেছেন যে, ১৫ সদস্যের সৌদি টিমের প্রধান খাশগজি হত্যাকাণ্ডের পর ৪ বার যুবরাজ সালমানের দপ্তরের প্রধান বাদের আল-আসাকের-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন৷ তুরস্কের পুলিশ ইস্তানবুল শহরে মাটির নীচে এক গ্যারেজে সৌদি কনসুলেটের এক পরিত্যক্ত গাড়ি শনাক্ত করেছে৷ সৌদি কনসালেটের কাছে গাড়িটি পরীক্ষার অনুমতি চাওয়া হয়েছে৷
এখনো পর্যন্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সৌদি আরবের বয়ানের সঙ্গে মিলছে না৷ সোমবার সিএনএন ২রা অক্টোবর তোলা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে এক সৌদি কর্মকর্তাকে খাশগজির পোশাক পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে৷ ফলে খাশগজির মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে সেই দিন ইস্তানবুলে পাঠানোর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷
খাশগজি হত্যা সম্পর্কে সৌদি আরবের সরকারি বয়ান নিয়ে প্রায় গোটা বিশ্ব সংশয় প্রকাশ করেছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি এই বয়ানে সন্তুষ্ট নন৷ তাঁর জামাই ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ডাক দেন৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর পর এবার বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভ মেনুশিন সৌদি আরব সফর করে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন৷ এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র প্রধান জিনা হ্যাস্পেল তুরস্ক সফর করেছেন৷
মঙ্গলবারই সৌদি আরবে বিশাল বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হচ্ছে৷ অথচ খাশগজির হত্যাকাণ্ডের পর রাজনীতি ও অর্থনীতি জগতের একের পর এক শীর্ষ ব্যক্তি তাঁদের অংশগ্রহণ বাতিল করেছেন৷ ফলে যুবরাজ সালমানের অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ জোরালো ধাক্কা খাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)