প্রশ্ন তুলল ইরান
২৬ এপ্রিল ২০১৮বুধবার একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তি সম্পর্কে মার্কিন-ফরাসি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি এবং বলেন যে, তেহরান যে ২০১৫ সালের ‘যৌথ পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি' অনুমোদন করেছে, তা থেকেই প্রমাণ হয় যে, তাঁর দেশ ‘‘গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র সংগ্রহের প্রচেষ্টা করছে না৷''
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ফরাসি সতীর্থ এমানুয়েল মাক্রোঁ তেহরানের সঙ্গে একটি ‘‘নতুন চুক্তির'' ডাক দেন৷
‘‘একটি ইউরোপীয় দেশের নেতার সঙ্গে ওরা বলছে: ‘আমরা একটি সাতপক্ষীয় চুক্তি সম্পর্কে একাই সিদ্ধান্ত নিতে চাই৷' কী কারণে? কোন অধিকারে?'' রোহানি একটি ভাষণে বলেন৷
ইরানের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার অভিযোগ করেন: ‘‘আপনি শুধু একজন ব্যবসায়ী....রাজনীতি, আইন অথবা আন্তর্জাতিক চুক্তির ব্যাপারে আপনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই৷ আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী সম্পর্কে আপনি কীভাবে রায় দেবেন?''
শুধু পারমাণবিক কর্মসূচি নয়
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহুবার ইরানের সঙ্গে যুগান্তকারী পরমাণু চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান ছাড়া ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন ও জার্মানি এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট৷ চুক্তিটি ইরানের পক্ষে বিশেষভাবে সুবিধাজনক, বলে ট্রাম্পের বিশ্বাস – যে কারণে তিনি চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে আসতে চান৷ কিন্তু মাক্রোঁ তাঁর মার্কিন সফরের অবকাশে বলেন যে, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটি ‘‘নতুন চুক্তি'' সম্পর্কে কথা বলেছেন যে চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও তার পরবর্তী বিকাশধারা সম্পর্কে ট্রাম্পের দুশ্চিন্তা দূর করার চেষ্টা করবে৷
ট্রাম্পের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মাক্রোঁ প্রস্তাব দেন যে, নতুন চুক্তিটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ইরানকে সিরিয়া ও ইয়েমেনে তার গতিবিধি থেকে বিরত করা হবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়া সংশ্লিষ্ট নয়
মাক্রোঁর এই প্রস্তাবের পিছনে কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন নেই৷ ‘‘একটি চুক্তি ইতিমধ্যেই আছে, সেটি কাজ করছে এবং সেটিকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন,'' ইইউ-এর বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোঘেরিনি ব্রাসেলসে সিরিয়া সম্মেলনের অবকাশে বলেছেন৷ ‘‘(এই চুক্তি) ইরানকে একটি পারমাণবিক সমরাস্ত্র বিকাশ থেকে বিরত থাকতে এবং কোনো পারমাণবিক সমরাস্ত্র বিকাশ না করার নিঃশর্ত প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য করেছে,'' বলে মোঘেরিনি যোগ করেন৷
রাশিয়াও ট্রাম্প-মাক্রোঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে৷ ‘‘(২০১৫ সালের চুক্তির) কোনো বিকল্প নেই, বলে আমাদের বিশ্বাস,'' ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন৷ ‘‘আমরা যৌথ পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচিকে তার বর্তমান রূপে বজায় রাখার সপক্ষে,'' বলে পেস্কভ যোগ করেন৷ ‘‘প্রশ্ন হলো, বর্তমান পরিস্থিতিতে ও ধরণের সফল উদ্যোগ কি সম্ভব?''
ট্রাম্পকে আগামী ১২ মে তারিখের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷
এসি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)