ফেসবুককে চারশ’ কোটি টাকা জরিমানা!
৫ এপ্রিল ২০১৭জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভা বুধবার এক আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে যেখানে ফেসবুক এবং টুইটারের মতো অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে বেশ বড় অংকের জরিমানার সুযোগ রাখা হয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অনলাইনে ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণা ছড়ানোর মতো কোনো বক্তব্য এবং ভুয়া সংবাদ বা এমন কিছু রোধে ব্যর্থ হলে, তাদের পঞ্চাশ মিলিয়ন ইউরো অবধি জরিমানা করা যাবে৷ শুধু তাই নয়, এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদেরও পাঁচ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে৷ ‘হেট স্পিচ’ এবং ভুয়া সংবাদ জার্মান আইনের পরিপন্থী৷
মন্ত্রিসভা থেকে বলা হয়েছে, যেসব ‘হেট ক্রাইম’ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা হয় না এবং বিচার করা হয় না, সেগুলো মুক্ত, অবাধ এবং গণতান্ত্রিক সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথে বড় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে৷ খসড়া আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য শীঘ্রই সংসদে তুলবেন জার্মান আইনমন্ত্রী হাইকো মাস৷
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নামলে অনলাইনে বিদেশিদের প্রতি ঘৃণাবাচক হেট স্পিচের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়৷ বিষয়টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছালে জার্মান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সেসব প্রতিরোধে আরো উদ্যোগী হবার আহ্বান জানায়৷
কিন্তু জার্মান সরকার এক পর্যায়ে বুঝতে পারে আইন পরিপন্থি কন্টেন্ট মুছে ফেলতে যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে না ফেসবুক এবং টুইটারের মতো জনপ্রিয় অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো৷ ফলে এবার অত্যন্ত বড় অংকের জরিমানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷
অবশ্য শুধু হেট স্পিচ বা ভুয়া খবরই নয়, খসড়া আইনে শিশু পর্নোগ্রাফি এবং সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পৃক্ত কন্টেন্ট মুছে ফেলার বিষয়টিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে৷ জার্মান আইন অমান্য করে এমন কন্টেন্ট মুছে ফেলতে ব্যবহারকারীরা ‘রিপোর্ট’ করার পর সর্বোচ্চ চব্বিশ ঘণ্টা সময় পাবে ফেসবুক এবং টুইটার৷ অন্যান্য আপত্তিকর কন্টেন্ট মোছার ক্ষেত্রে এই সময়সীমা সর্বোচ্চ সাত দিন৷
আপত্তিকর কন্টেন্ট সম্পর্কে অভিযোগ করার প্রক্রিয়াও আরো সহজ করতে মিডিয়া গ্রুপগুলোকে৷ সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, ‘‘অনলাইনে আলোচনায় বর্তমানে এক বিশাল পরিবর্তন ঘটছে’’ বলেই এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে হচ্ছে৷
খসড়া আইনটি সংসদে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে, কেননা, সেখানে ম্যার্কেলের জোট সরকারের আধিপত্য রয়েছে৷
এআই/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)