1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটিশ সংসদে বিধ্বস্ত জনসন 

৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংসদে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী জনসনের দলে বিদ্রোহ দানা বাঁধছে৷ ব্রেক্সিটে বিলম্ব ও আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে৷ ইইউ নিজস্ব পদক্ষেপ নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3OyJD
ব্রিটেনের সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রথম জয়
ছবি: picture alliance/dpa/AP/UK Parliament/M. Duffy

সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদের শক্তি কমানোর চেষ্টা করলে তার পরিণাম কী হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর মঙ্গলবার বিকালে সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই একের পর এক পরাজয় হজম করতে হলো তাঁকে৷ গভীর রাতে সেই ক্ষতির মাত্রা স্পষ্ট হয়ে গেল৷

প্রথমেই সংসদে টোরি দলের শক্তি কমে গেল৷ দলত্যাগ করে উদারপন্থি দলে যোগ দিলেন ফিলিপ লি৷ ফলে মাত্র একটি আসনের ব্যবধানে সরকারি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আর রইলো না৷ তারপর স্পিকার জন বার্কো সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও বিরোধী পক্ষের অনুরোধ মেনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর লক্ষ্যে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার অনুমতি দিলেন৷ ৩২৮ জন সদস্য এ বিষয়ে বিতর্কের পক্ষে, ৩০১ জন বিপক্ষে ভোট দেন৷ অর্থাৎ সরকার পক্ষের ২১ জন সংসদ সদস্যও তাঁদের সম্মতি জানিয়েছেন৷ এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা দূর হবে৷ ১৯শে অক্টোবরের মধ্যে ইইউ-র সঙ্গে বোঝাপড়ায় ব্যর্থ হলে সরকারকে ৩১শে অক্টোবরে ব্রেক্সিটের সময়মীয়া আরও ৩ মাস বাড়াতে ব্রাসেলসের দ্বারস্থ হতে হবে৷ বুধবারই এই প্রস্তাব অনুমোদিত হতে পারে৷

বলা বাহুল্য, বরিস জনসন এমন পরিস্থিতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ ব্রেক্সিটে আরও বিলম্ব হলে তিনি আগাম নির্বাচনের হুমকি দিয়েছেন৷ কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন৷ বিরোধী লেবার দলের আগাম নির্বাচনে আপত্তি নেই, তবে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে আগামী বছরের ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার শর্ত স্থির করেছে তারা৷

টোরি দলের মধ্যে বিদ্রোহ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন জনসন৷ দলের অবস্থানের বিরোধিতা করলে আসন ও আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন হারানোর হুমকি সত্ত্বেও ১ জন দলত্যাগ ও ২১ জন সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন৷ বিদ্রোহীদের মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের নাতি নিকোলাস সোমস৷ সবার আগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে৷ বাকিদেরও একই পরিণতি হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ দুই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড ও কেনেথ ক্লার্কও মঙ্গলবার সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন৷

এমন প্রেক্ষাপট ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ব্রিটিশ সরকার আলোচনায় অগ্রগতির দাবি করলেও ব্রাসেলস জানিয়েছে, আইরিশ সীমান্তে ব্যাকস্টপ এড়াতে লন্ডন থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো বিকল্প পেশ করা হয় নি৷ অথচ প্রায় দুই সপ্তাহ আগে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-এর সঙ্গে আলোচনার পর বরিস জনসন এক মাসের মধ্যে এমন বিকল্প পেশ করার অঙ্গীকার করেছিলেন৷

এই অবস্থায় চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাচ্ছে৷ বুধবারই ইউরোপীয় কমিশন সেই পরিস্থিতির প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি নথি প্রকাশ করতে চলেছে৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাতে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ফলে ইইউ সদস্য দেশগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি, শ্রমিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য আর্থিক সহায়তার উল্লেখ রয়েছে৷ বিশেষ করে আয়ারল্যান্ডে এই সাহায্যের বিশেষ প্রয়োজন হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)