অ্যামনেস্টির সমালোচনা
৫ নভেম্বর ২০১৯গত বছর বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূতভাবে মোট ৪৬৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে৷ যা ২০১৭ সালের চেয়ে তিনগুণ বেশি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ এসব হত্যাকাণ্ডের বেশিরভাগই ঘটেছে মাদক বিরোধী অভিযানের নামে৷ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঘোষিত ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে৷ অ্যামনেস্টি বলছে এসব ঘটনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন-র্যাবের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে৷ তারা আইন বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে, পরবর্তীতে স্বজনরা তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ পেয়েছে হাসপাতালের মর্গে৷
সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার উপ পরিচালক দিনুসিকা দিশানায়েক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এইসব হত্যাকাণ্ডের ইতি টানতে হবে৷ মাদক বিরোধী অভিযানের ভীতি এখন দেশের দরিদ্র অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে৷ মাদকের সাথে সামান্য সংশ্লিষ্টতার সন্দেহেও বিচারবহির্ভূতভাবে প্রিয়জনকে হত্যা করা হতে পারে এমন শঙ্কায় ভুগছে সাধারণ মানুষ৷’’
অ্যামনেস্টি বলছে, এসব ঘটনার যথাযথ তদন্ত না করে সরকার বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ারকে উল্টো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে৷ পুলিশ এইসব ঘটনায় বানোয়াট প্রত্যক্ষদর্শী তৈরি করে তাদের কাছ থেকে মিথ্যা বিবৃতি আদায় করছে বলেও অভিযোগ সংস্থাটির৷ ‘‘অ্যামনেস্টি যতগুলো ঘটনা তদন্ত করেছে তার সবগুলোতেই অভিযুক্তকে প্রথমে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে৷ লাশ পাওয়ার আগে এক দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত তারা নিখোঁজ ছিল৷ একজনকে ছেড়ে দেয়ার শর্তে পুলিশকে ঘুষ দিয়েছেন বলে তার স্বজনেরা দাবি করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ব্যক্তিকে ছাড়া হয়নি,’’ অ্যামনেস্টি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে৷
‘ক্রসফায়ারে হত্যা: বাংলাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ’, এমন শিরোনামে সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ঘটনাস্থল থেকে সাতটি বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ, নিহতদের স্বজনদের ৪০ জন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি করা প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনাস্থলের আশেপাশে বসবাসরতদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷
এফএস/কেএম (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল)