যৌন হয়রানির শিকার অস্ট্রেলীয় শিশুরা
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭অস্ট্রেলিয়ায় অনেকদিন ধরেই শিশুদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠছিল৷ ২০১২ সালে সরকার ‘রয়েল কমিশন ইনটু ইন্সটিটিউশনাল রেসপন্সেস টু চাইল্ড সেক্সুয়াল এবিউজ'-কে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন৷ এরপর পাঁচ বছর ধরে তদন্ত শেষে শুক্রবার ১৭ ভলিউমের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কমিশন৷ ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিশন এই পাঁচ বছরে আট হাজারেরও বেশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলেছে, ৪২ হাজারের বেশি টেলিফোন কল রিসিভ করেছে, আর চিঠি ও ইমেল পেয়েছে প্রায় ২৬ হাজার৷ এছাড়া কমিশন আড়াই হাজারেরও বেশি বিষয় তদন্ত করতে পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে৷ এর মধ্যে ২৩০টি বিষয়ে তদন্ত চলছে৷
১৯৫০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে কাজ করা প্রায় সাত শতাংশ ক্যাথলিক যাজকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ শুনেছে কমিশন৷ কিন্তু কখনই এ সব অভিযোগের তদন্ত করা হয়নি৷ বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুরা এসব অভিযোগ নিয়ে আসলে তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে৷
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কমিশন ১৭৮টি সুপারিশ করেছে৷ এর মধ্যে একটিতে যাজকদের জন্য কৌমার্য গ্রহণ স্বেচ্ছাপ্রসূত করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ কারণ যাজক হতে বর্তমানে যে শর্ত রয়েছে তা শিশু যৌন হয়রানি অন্যতম কারণ বলে মনে করছে কমিশন৷
মেলবোর্নের আর্চবিশপ গির্জার এমন ‘লজ্জাকর' অতীতের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ তবে কৌমার্য গ্রহণের বিষয়ে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ভ্যাটিকানকে নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি৷
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সিনিয়র ক্যাথলিক যাজক জর্জ পেলের বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে৷ তিনি বর্তমানে ভ্যাটিকানের অর্থ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ পেলের বিরুদ্ধে আগামী মার্চে একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে৷ তখন ঠিক করা হবে পেলের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কিনা৷ প্রতিবেদন বলছে, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার অনেক প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে৷ প্রকৃত সংখ্যা আমরা কখনই জানতে পারবনা৷''
গির্জা ছাড়াও এতিমখানা, খেলাধুলার ক্লাব, স্কুল - এসব প্রতিষ্ঠানেও শিশুরা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে৷ ‘‘এটা জাতীয় ট্র্যাজেডি, যা অনেকদিন ধরে আমাদের অনেক বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে,'' প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)