রোহিঙ্গাদেরকে ফেলে আসা ভূমিতেই ফিরিয়ে নেয়া হবে: মিয়ানমার
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯সাত লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও বাস্তবিক সমাধানের চেষ্টা করছে মিয়ানমার৷ এজন্য বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সঙ্গে তারা কাজ করছে বলে জানান দেশটির অফিস অব স্টেইট কাউন্সিলরমন্ত্রী কিয়াও টিন্ট সুয়ি৷ শনিবার তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন৷ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়াসহ, গণহত্যার কারণে দেশটির কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি৷
টিন্ট সুয়ি বলেন, ‘‘সহিংসতার জেরে রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলো আক্রান্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে যে উদ্বেগ আছে সেটি তারা ধারণ করেন৷ দ্রুত পুনর্বাসন এবং যাচাই বাছাইর মাধ্যমে ফিরে আসাদের জন্য আরো সহায়ক একটি পরিবেশ তৈরির উপর আমরা এখন প্রাধান্য দিচ্ছি৷'' তবে এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ, মিয়ানমারের বাইরে অন্য কোন দেশ থাকার প্রয়োজন নেই বলেও জানান তিনি৷ বলেন, ‘‘প্রতিবেশীদের মধ্যকার ইস্যু অবশ্যই হৃদ্যতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ায় সমাধান করতে হবে৷''
মিয়ানমারের উপর চাপতৈরির জন্য অনবরত চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘সেইফ জোন বা নিরাপদ অঞ্চল গড়ার দাবি৷ একদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে যেমন নিশ্চয়তা দিতে পারবে না, অন্যদিকে সেটি কাজও করবে না৷''
দেয়া হবে পরিচিতি কার্ড
ফিরিয়ে নেয়ার পর রোহিঙ্গাদের পরিচতি কার্ড দেয়া হবে বলেও জানান এই মন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘যে-ই ফিরে আসবে তাদেরকে একটি কার্ড প্রদান করা হবে৷ যারা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হবে তাদেরকে দেয়া হবে নাগরিকত্ব কার্ড৷ বাকীদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড দেয়া হবে, যা দিয়েও মিয়ানমারে বসবাস করা যাবে৷'' যদিও এর আগে বরাবরই রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে অস্বীকার করে আসছিল দেশটি৷
দায়ীদের বিচারে সামরিক আদালত
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর দেশটির সামরিক বাহিনীর নির্যাতনকে এরইমধ্যে গণহত্যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ৷ এজন্য মিয়ানমারের সামরিক কমান্ডারদের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি করার প্রস্তাব দিয়েছিল সংস্থাটির তদন্ত কমিটি৷ গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সর্বোচ্চ কমিটিও এ বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য একটি দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
তবে জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে এই বিচার প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করেছেন মিয়ানমারে মন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের বিচার করতে পারবে না৷ কেননা দেশটি এই আদালতের সঙ্গে নেই৷'' তবে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো নির্যাতনের বিষয়ে দেশটির সামরিক বাহিনী সম্প্রতি একটি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান টিন্ট সুয়ি৷ যার প্রেক্ষিতে দায়ীদের বিচারে খুব দ্রুত ''কোর্ট মার্শাল'' বা সামরিক আদালত গঠন করা হবে৷
এফএস/এআই (এপি, এএফপি)