আসুন নদী ভাঙন রোধে সচেষ্ট হই
১৩ জুন ২০১৭নদীর ভাঙনের কারণগুলোর দিকে তাকালে কিন্তু মনে হয়, অনেককিছুই আমাদের হাতে রয়েছে৷ অনেকক্ষেত্রেই আমাদের কারণেই নদী ভাঙন ঘটছে৷ চলুন জেনে নিই নদী ভাঙনের কয়েকটি মানবসৃষ্ট কারণ৷
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীর গতি রোখার চেষ্টার কারণে নদীভাঙন ঘটতে পারে৷ অনেক সময় নদীর মাঝখান দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করা হয়, যা ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে৷ অবশ্য এই কাজ যদি একান্ত করতেই হয় তাহলে আগে নদীর পাড় যথেষ্ট মজবুত করে নিতে হবে৷ অপরিকল্পিতভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টাও নদী ভাঙনের এক বড় কারণ৷
শহরাঞ্চলে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় খাল বা নালা দখল করে ফেলায় কিংবা অন্য কোনো কারণে সেগুলো বন্ধ করে ফেলায় বর্ষা মৌসুমে নদীর উপর পানির চাপ অনেক বেড়ে যায়৷ পানির অতিরিক্ত প্রভাবের চাপ তখন পড়ে পাড়ে৷ ফলে সৃষ্টি হয় ভাঙন৷
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আমি দেখেছি যে, নদীর পাড়ে বেশ খানিকটা জায়গা ছেড়ে দিয়ে ভেতরের দিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়৷ ফলে যে অংশ বাঁধের বাইরে থাকে সেই অংশ অরক্ষিত থাকে এবং অনেক সময় ভেঙে যায়৷
নদীর পাড়ের ঘাস, কাশবনসহ অন্যান্য বন উজাড় করে ফেললে মাটি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পানির তোড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়৷ এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন বা ড্রেজিংয়ের কারণে ক্ষতির শিকার হয় নদী৷
আরেকটি বিষয় হচ্ছে দুর্নীতি৷ নদী ভাঙন রোধে নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ায় এবং যে ধরণের দ্রব্য ব্যবহার করে নদীর পাড় মজবুত করতে বলা হয়, দুর্নীতি করতে গিয়ে তা করা সম্ভব হয় না৷ ফলে সরকারি উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে তা তেমন সহায়ক হয় না৷
উপরেউল্লেখিত মনুষ্যসৃষ্ট এসব কারণ ছাড়াও প্রাকৃতিক কারণেও নদী ভাঙে৷ বাংলাদেশ একটি পলি গঠিত বদ্বীপ৷ এই দ্বীপে ভাঙা-গড়ার খেলা চলছে হাজার হাজার বছর ধরে৷ সেই প্রাকৃতিক খেলা আমাদের পক্ষে বন্ধ করা কঠিন৷ কিন্তু আমরা, মানুষরা, যেসব কারণ সৃষ্টি করেছি, সেগুলো যদি রোধ করা যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে নদী ভাঙনের ক্ষতি রোধ সম্ভব হবে৷ প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি এই ব্যাপারে সচেষ্ট হবো?
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷