1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকারের জবাবদিহিতায় ফেসবুক গুরুত্বপূর্ণ

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আন্দোলন থেকে দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ শেয়ার করার মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক অন্যতম৷ কিন্তু এটা কতটা নিরাপদ? জানাচ্ছেন এক্সেস টু ইনফরমেশনের ‘হেড অফ ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট' মানিক মাহমুদ৷

https://p.dw.com/p/35Mph
Symbolbild - Cybersicherheit
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Kaiser

ডয়চে ভেলে: সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে কী কী উপায়ে নিরাপদ রাখা যায়?

মানিক মাহমুদ: কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এটা কোন পারপাসে ব্যবহার করছে সেটার উপর নির্ভর করবে এটা কতটা নিরাপদ থাকবে, কতটা থাকবে না৷ সরকারের মধ্যে যখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার হয় তখন সরকারের লক্ষ্য থাকে সরকারের সেবা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্যগুলো কীভাবে জনগণের কাছে এর মধ্য দিয়ে পৌঁছানো যায়৷ কাজটা খুব সহজ না৷ কয়েক বছর ধরে চলছে৷ এখানে আসলে পারপাসটা গুরুত্বপূর্ণ৷ এটার টেকনিক্যাল উত্তর আমি দিতে পরব না৷ তবে কে কীভাবে ব্যবহার করছে, কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সরকার যদি হয় সরকার তার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে৷

একজন ব্যক্তি এটা কীভাবে নিরাপদ রাখতে পারেন অথবা রাষ্ট্রই বা কী করতে পারে?

একজন ব্যক্তি এটা কীভাবে ব্যবহার করবে সরকার সবটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না৷ কেউ এটা দৈনন্দিন জীবনের কাজে লাগাচ্ছে, কেউ হয়ত ব্যবসার কাজে লাগাচ্ছে৷ আবার সরকার সেবা দেয়া নেওয়ার কাজে লাগাচ্ছে অথবা চিন্তা বিকশিত হওয়ার কাজে লাগাচ্ছে৷ কোনো ব্যক্তি হয়ত বিনোদনের জন্য কাজে লাগাচ্ছে৷ বিনোদনের আবার কয়েকভাগে ভাগ করা যায়৷ কেউ হয়ত চটক বিনোদনের জন্য, কেউ আবার কাউকে উত্যক্ত করার জন্য ব্যবহার করছে৷ একেকজনের উদ্দেশ্য একেকরকম৷ সরকার তো অনেক সময় ব্যক্তিকে বাধ্য করতে পারে না৷ এটা তো একটা ‘কমন প্ল্যাটফর্ম৷ সরকার হয়ত কমন কিছু ইন্টারেস্ট মাথায় রেখে নিয়মকানুন করে৷ সেটা যখন ‘ভায়োলেশন' হয় তখন হয়ত সরকার এটার ‘কন্ট্রোল' নেয়৷ তবে এভাবে যদি শতভাগ কাজ হতো তাহলে তো সোশ্যাল মিডিয়ার বদনাম হতো না৷

মানিক মাহমুদ

রাষ্ট্রের জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে নিরাপদ করতে ‘এক্সেস টু ইনফরমেশন' বা এটুআই কী পদক্ষেপ নিয়েছে?

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম কীভাবে নিরাপদ হবে, ওটা কিন্তু এটুআই-এর ‘এরিয়া' না৷ এটুআই-এর কাজ হলো সরকার তার সেবা আরো কীভাবে সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে৷ এখানে সরকার সেগুলোকেই আনতে চায়, যেগুলো সেবা দেয়া বা নেওয়ার প্রশ্ন বা সেবার মান উন্নতি করার প্রশ্নে জনগনের মতামত নিতে চায়৷ সরকার স্বচ্ছ বা ‘ওপেন' হওয়ার জন্য এই কাজটা করে৷ নিরাপদ রাখার জন্য যে আইন আছে সেটাই৷ এখানে এটুআই কোনো হস্তক্ষেপ করে না৷

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিয়ে এটুআই থেকে কী ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে?

এটা তো একটা ধারাবাহিকতা৷ অনেকদিন ধরে এটুআই এটা নিয়ে কাজ করছে৷ এটুআই-ই প্রথম সরকারকে বলতে শুরু করেছে, সরকারের কাজ স্বচ্ছ করার প্রশ্নে বা জবাবদিহিতার প্রশ্নে বা সেবার মান বাড়ানোর প্রশ্নে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা যায়৷ সরকারের সকল মন্ত্রণালয়ে, সকল অধিদপ্তরে বা সকল অফিসে এটা নির্দেশ দেয়া আছে যে, সেবা দেয়া বা নেওয়ার কাজে তারা এটা ব্যবহার করবে৷ কিন্তু সব প্রতিষ্ঠান এটা একরকমভাবে ব্যবহার করছে না৷ আপনি যদি মাঠ প্রশাসনে যান তাহলে দেখবেন তারা সবচেয়ে কার্যকরভাবে এটার ব্যবহার করছে৷ আমাদের পরিকল্পনা হলো – যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে সেবা আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো স্বচ্ছ, আরো শক্তিশালী, আরো গতিশীল করা

এটুআই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিয়ে তাহলে এখন কী কাজ করছে?

অনেকগুলো কাজ করছে৷ দেশে বা দেশের বাইরে সরকারের সবচেয়ে বেশি পরিচিত একটা জিনিস হলো ‘ডিজিটাল সেন্টার'৷ যেটা প্রতিটি ইউনিয়নে আছে৷ প্রতিটি ইউনিয়নেরই একটা ডিজিটাল সেন্টার ব্লগ আছে৷ আমি একটা পুরনো উদাহরণ বলি, কক্সবাজারের মহেষখালী এলাকার ৭২ বছর বয়সি একজন বৃদ্ধ লোক তার জানা দরকার উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স সম্পর্কে৷ কারণ উনি একদিন উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্সে গিয়ে সেবা পাননি৷ উনি খুবই বিরক্ত হয়েছিলেন৷ তখন উনি একজনকে বলছিলেন, এটা নিয়ে আমি কীভাবে অভিযোগ করতে পারি? তখন সেখানে থাকা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যক্তা বলছিলেন, চাচা মিয়া আমি আপনাকে সরাসরি কোনো সহযোগিতা করতে পারব না৷ তবে আপনার অভিযোগ নিয়ে আমি একটা ব্লগ লিখতে পারি৷ তখন তিনি একটা ব্লগ লেখেন৷ যেটা নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক হৈ চৈ হয়৷ তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি, মন্ত্রণালয়ের সচিব বা মন্ত্রী সবাই মিলে কয়েকদিন ধরে আলোচনা করে একটা জিনিস ফাইনাল করেন, যে তারা একটা নম্বর দিলেন যে কেউ যদি উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্সে গিয়ে সেবা না পান তাহলে ওই নম্বর অভিযোগ দেয়া যাবে৷

দেশে কতভাগ মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন? কোনো জরিপ আছে?

না, এমন কোনো জরিপ বা গবেষণা নেই৷ তবে আমাদের কাছে একটা তথ্য আছে সেটা হলো – সরকারের তো মাঠ পর্যায়ের প্রতিটি অফিসেই ফেসবুকের পেজ আছে৷ সেটা ডিসি, ইউএনও, বা কৃষিসহ ধরনের অফিসেই আছে৷ সবগুলো আবার একরকম সক্রিয় নয়৷ আমরা একটা হিসেব করেছি, প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত৷ অবশ্যই এখানে ‘ডুপ্লিকেশন' আছে৷ একই লোক হয় পাঁচ জায়গায় যুক্ত আছেন৷ সেটা ধরেই আমাদের গবেষণা দল বের করেছিল দেড় কোটি মানুষ এটার সঙ্গে যুক্ত আছেন৷ আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এই সংখ্যাটা অনেক বেশি৷

একজন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রান্ত হলে তার প্রতি আপনার পরামর্শ কী হবে?

আমি আসলে পরামর্শ দেবো এটুআই হয়ে৷ সরকার তো এটা খুলেছে সেবা দেয়া বা নেয়ার কাজে৷ এখানে তার আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই৷ তবে সে যদি এই মাধ্যমে সরকারকে আক্রমণ করে, তাহলে তাকে আমি পরামর্শ দেবো সেটা না করার জন্য৷

সরকারের জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম কতটা চ্যালেঞ্জ?

দু'রকম৷ সেবা বা চিন্তা-চেতনার কাজে কোনো বাধা নেই৷ এখানে কেউ যদি ছোট খাট ভুল করেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাকে পরামর্শ দিতে পারবে৷ কিন্তু কেউ যদি রাজনৈতিক কথাবার্তা বলে, তাহলে সরকার তো সচেতন থাকবেই৷ কোনো সরকারই চাইবে না, এখানে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কেউ কিছু বলুক৷ সরকার গণতন্ত্রের কথা বলবে, স্বচ্ছতার কথা বলবে, কিন্তু এখানে তার বিরোধী কিছু হলে সরকার তো সেটা চিন্তা করবেই৷ এটা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ৷ তবে রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়া এখানে সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জের কিছু আমি অন্তত দেখি না৷

ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সমীর কুমার দে৷
সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান